জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে স্কুলে যায় চর নূরউদ্দিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভোলা দক্ষিন আইচা!
হাসান লিটন, স্টাফ রিপোর্টার
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা দক্ষিণ আইচা থানা নজরুল নগর ১৫ নং ইউনিয়নের চর নুরউদ্দিন ৬নং ওয়ার্ড সহ কয়েকটি গ্রামের সাথে উত্তর চর মানিকা সড়কের সংযোগ।চর নুরউদ্দিন গ্রামের খালের ওপর ব্রিজ না থাকায় দীর্ঘ দিন ধরে নজরুল নগর ইউনিয়নের ৬ নং চর নুরউদ্দিন গ্রাম সহ কয়েকটি গ্রামের লাক্ষ্যদিক মানুষকে নড়বড়ে ঝুকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে।এই ঝুঁকিপূর্ন বাশেঁর তৈরি সাকু দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হয়।প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দূঘর্টনা।
গোটা বছর চর নুরউদ্দিন খালে পানি থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় এলাকার মানুষকে।সাঁকোর ওপারে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা এবং হাট-বাজার থাকায় জনগুরুত্বপূর্ন এই সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করতে হয়।গ্রামের শত শত সাঁতার না জানা শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছে।ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।১/০২/২০২০ ইং তারিখে স্কুলে যেতে সাঁকো পারারের সময় (১) শিশু সাঁকোতে পরে আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। জরুরি ভিত্তিতে এখানে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
৪/০২/২০২০ ইং তারিখে জাতীয় দৈনিক আলোকিত সকাল পত্রিকা সরেজমিনে গিয়ে
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,ভোলা চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিন আইচা থানায় ১৫নং নজরুল নগর ইউনিয়ন ও ৬নং চর নুরউদ্দি ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বহমান বুড়ো গৌরাঙ্গ নদী।এই নদী গ্রামীণ জনপদের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। নদীর বুকে স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়নি। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় ২ থেকে ৩ গ্রামের মানুষকে। বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, মুমূর্ষু রোগী,স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের এবং শিশুসহ বৃদ্ধদের।অন্যদিকে স্থায়ী সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষতিগস্ত হচ্ছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসার পর থেকে বার বার সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।মানুষ জীবনের তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছেন। ফলে নীরব ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। তারপরেও দুর্ভোগ থেকে মুক্তির জন্য স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি তাদের।
বুড়ো গৌরাঙ্গ নদীর ওপারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১) টি রয়েছে । এ প্রতিষ্ঠানের নদীর ওপার থেকে প্রায় (২০০/২০৯/) ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করে। এ প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নদীর ওপার থেকে আসে। বর্ষাকালে নদীতে পানি বেশি হলে বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে অনেক অভিভাবক ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পায়।
চর নুরউদ্দিন বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম (৪০) ও ৬নং ওয়ার্ড ইউনিয়ন মেম্বার আলাউদ্দিন (৪০) বলেন নদীর ওপারে অনেক শিক্ষার্থী এই স্কুলে লেখাপড়া করে। এখানে ব্রীজ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের।বৃষ্টির দিনে বাঁশের সাঁকো ভিজে পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।সেতু নির্মিত হলেই এলাকাবাসীর জন্য যাতায়াতব্যবস্থাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন সুযোগের সৃষ্টি হবে।
চর নুরউদ্দিন সরকারি বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন,সেতু না থাকায় এখানকার মানুষ আজ অবহেলিত। সাধারণ মানুষসহ শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমার বিদ্যালয়ে ২০৯জন ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসে।অথচ সেতুটি নির্মাণ হলে ভোগান্তি লাগবের পাশাপাশি যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হতো।
হাবুল্লার দোকান বাজার এক ব্যবসায়ী বলেন,প্রতিদিন ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসে।প্রায় সময় সাঁকো পার হতে গিয়ে পানিতে পড়ে যাওয়ার খবর আসে। তাই শিক্ষকরা আতঙ্কে থাকেন।এই ব্রীজটি মানুষের যাতায়াতের খুবই জরুরী। ওই প্রধান শিক্ষক মনে করেন, শিশুদের কথা চিন্তা করে হলেও নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা উচিত।
হাবুল্লার দোকান মসজিদের ইমাম মোঃ নুরুল ইসলাম (২৭) জানায় সাঁকোটা পার হওয়ার সময় জানটা হাতে লইয়া পার হই,কখন যে নিচে পইড়া যাই আল্লাই জানেন।
স্থানীয় একনেতা আঃরাজ্জাক হরাজি(৭০) বলেন,আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসার পর থেকে এখনো এই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।এলাকার শত শত শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। এখানে সেতু না হওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টির দিনে বাঁশের সাঁকো ভিজে পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ভয়ে বেশ কিছু ছাত্রী নিয়মিত বিদ্যালয়ে যায় না। এমনকি ছাত্রীরা বাঁশের সাঁকো পারাপারের ভয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী লেখা পড়া বন্ধ হচ্ছে।