গাজীপুর থেকে মনির হোসেনঃ
গাজীপুর সদর উপজেলার কেশরিতায় লাক্সারি ফ্যান কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত পরিবারের সদস্যদের হাতে এক লাখ টাকা করে ১০ লাখ টাকা অনুদানের চেক হস্তান্তর করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে গাজীপুর প্রেস ক্লাব চত্বরে কারখানার হেড অব সেলস অফিসার মো. শফিকুর রহমান নিহত ১০ শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের হাতে এ চেক তুলে দেন।
গত ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের কেশোরিতা এলাকার লাক্সারি ফ্যান তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন নিহত হন।
তারা হলেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মার্তা গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে রাশেদ (৩৪), একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে শামীম (২২), গাজীপুর মহানগরীর নোয়াগাঁও এলাকার লালমিয়ার ছেলে পারভেজ (১৯), ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার রাঘবপুর গ্রামের সেলিমের ছেলে তরিকুল ইসলাম (১৯), রংপুরের হারাগাছ থানার কাচু বকুলতলা গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে ফরিদুল (২৩), নরসিংদীর বেলাব থানার চর কাশিনগর গ্রামের মাজু মিয়ার ছেলে সজল (২০)), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্জারামপুর থানার মোরশেদ মিয়ার ছেলে ইউসুফ (৩০), দিনাজপুরের কাহারুল উপজেলার বারপাইটা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে লিমন (১৯), গাজীপুর সদর উপজেলার কেশরিতা গ্রামের বীরবল চন্দ্র দাসের ছেলে উত্তম চন্দ্র দাস (১৮) ও একই উপজেলার কালনী গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে ফয়সাল খান (২০)।
এর আগে মরদেহ দাফনের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। আহতদের চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানার হেড অব সেলস মো. শফিকুর রহমান বলেন, প্রতি মাসে নিহতের প্রতি পরিবারকে আজীবন ১০ হাজার টাকা ও উৎসব বোনাস দেয়া হবে। তারপরও তাদের পরিবারের যোগ্য ও কর্মক্ষম প্রতিনিধিকে চাকরি দেয়া হবে। সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ দেয়া হবে।
কারখানার অনুমোদন ও অনুমতির কাগজপত্র আছে দাবি করে তিনি বলেন, ঘটনার পরপর আমাদের মানসিক অবস্থা ঠিক না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে তা কর্তৃপক্ষকে দেখাতে পারিনি।
নিহত শ্রমিক রাশেদের বাবা কামাল হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে উপযুক্ত বিচার চাই।
নিহত তরিকুলের বাবা মো. সেলিম বলেন, আমি অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করি। আমি ছাড়া আমার একমাত্র ছেলে সংসারের উপার্জনক্ষম ছিল। ছেলের মৃত্যুতে এক বস্তা টাকা দিলেও ক্ষতিপূরণ সম্ভব হবে না।
নিহত ইউসুফ আলীর স্ত্রী হাজেরা বলেন, জীবন-মৃত্যু আল্লাহর হাতে। যিনি গেছেন তিনি তো গেছেনই। তবে আমি ও আমার শিশু সন্তানের ভরণপোষণের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই।