ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় পুরাতন একটি টয়লটের ভেতর থেকে নিখোঁজের ২১ দিন পর হেলাল উদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত ২টার দিকে উপজেলার রাধাবল্লভপুর নিজ গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের রাধাভল্লবপুর গ্রামের মো. হাসিম উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন (৩৫) গত ১৮ জানুয়ারি ব্যবসার কাজে উচাখিলা বাজারে যান। প্রতিদিন রাতে বাড়িতে ফিরলেও ওই দিন হেলাল উদ্দিন আর বাড়ি ফেরেনি।
পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো হদিস পায়নি পরিবারের স্বজনরা। নিখোঁজের বিষয়ে গত ২০ জানুয়ারি ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন নিখোঁজ ব্যবসায়ীর স্ত্রী মাজেদা খাতুন। কিন্তু ২১ জানুয়ারি রাতে মুঠোফোনে হেলালের বড় ভাই মো. দুলাল মিয়ার মোবাইলে ফোন আসে। ফোনের অপর প্রাপ্ত থেকে বলা হয়- তোর ভাই কি হারানো গেছে? তোর ভাইকে আমরা নিয়ে গেছি। ফেরত পেতে হলে ২ লাখ টাকা লাগবে।তখন দুলাল মিয়া এতো টাকা দিতে পারবে না অনুনয় বিনয় করলে এক লাখ টাকায় রফা হয়।
টাকা নিয়ে যেতে বলা হয় উচাখিলা-লক্ষীগঞ্জ সড়কে। ওই দিন কিছুদূর গিয়ে মুঠোফোনে ওই নম্বরে কল দিয়ে তা বন্ধ পান দুলাল। ওই অবস্থায় বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ মুঠোফোনের নম্বরটি দিয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় উচাখিলা ইউনিয়নের মঘা গ্রামের নুর ইসলাম ও তার ছেলে আজিজুলকে আটক করে। মুঠোফোনের ওই নম্বরটি নুর ইসলামের নামে থাকায় এবং ফোনটি আজিজুল ব্যবহার করায় তাদের আটক করা হয়। কিন্তু ঘটনার অন্তত ১৫ দিন আগে ফোনটি হারিয়ে যাওয়ায় এবং তাদের কাছ থেকে কোনো ধরণের ক্লু না পাওয়ায় পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় দুজনকে ছেড়ে দেন।
পরে শুক্রবার রাতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় একই গ্রামের আক্কাস ও আকাশ, কাঞ্চন, ফারুক, রিপন, খাইরুলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে সিলেট থেকে উত্তম নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। রাত ১২টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসির নেতৃত্বে উত্তমকে নিয়ে অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল।
এ সময় উত্তমের দেয়া স্বীকারোক্তি মতে রাধাভল্লবপুর গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের বাড়ির পিছনের পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে হেলাল উদ্দিনের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। আজ সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় বলেও জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।